আমাদের ইউনিয়ন দাবি করে যে, তাপপ্রবাহ চলাকালীন সময়ে কৃষিশ্রমিক এবং এই এলাকার প্যাকিং কারখানার কর্মচারীদের সুরক্ষার জন্য সকল প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। যখন তাপমাত্রা ৩৮°C-এ পৌঁছায়, তখন আউটডোর কাজ বন্ধ করার দায়িত্ব নিয়োগকর্তা, রাষ্ট্র এবং সরকারের। তেমনি, যেসব ইনডোর জায়গায় যথাযথ শীতাতপনিয়ন্ত্রণ নেই, সেখানেও কাজ বন্ধ করতে হবে।
সরকারের পদক্ষেপ — যেমন শেষ মুহূর্তে বিজ্ঞপ্তি জারি করা — একধরনের উপহাসের মতো, বিশেষ করে যখন বর্তমান সরকার, আগের সরকারের মতোই, একের পর এক নিয়ম চালু করছে যা নিয়োগকর্তাদের পক্ষে যায়। এর একটি উদাহরণ হলো, তাপপ্রবাহ চলাকালীন সময়ে নিয়োগকর্তারা কর্মীদের কাজের সময় পরিবর্তন করতে পারবে, অথচ সেটি আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো বাধ্যতামূলক নয়।
বর্তমান কর্মপরিস্থিতি — প্রতিদিনের শ্রমিক দুর্ঘটনা ও পেশাগত রোগ, যা আমাদের দেশে অনেক সময় নথিভুক্তও হয় না — বর্তমান ও আগের সরকারের গুরুতর দায়িত্বকে তুলে ধরে। এই সব সরকার এমন নীতিমালা গ্রহণ করেছে, যা মূলধনের মুনাফার জন্য শ্রমিকদের স্বাস্থ্য ও জীবনকে ত্যাগ করছে। অস্থায়ী চাকরি, কাজের চাপ বৃদ্ধি, অসীম কাজের সময় এবং বৃদ্ধ বয়সেও কাজ করার বাধ্যবাধকতা শ্রমিকদের স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি সৃষ্টি করছে।
সরকার এখন আরেকটি শ্রমিকবিরোধী আইন আনতে চলেছে, যাতে ১৩ ঘণ্টার কর্মদিবস প্রস্তাব করা হয়েছে, যা কর্মক্ষেত্রের দুর্ঘটনা ও পেশাগত রোগকে আরও বাড়াবে।
আমরা দাবি করি:
● তাপমাত্রা ৩৮°C ছাড়িয়ে গেলে, বা আপেক্ষিক আর্দ্রতা অনুযায়ী তার চেয়ে কম হলেও, সব আউটডোর কাজ অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। কর্মক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক তাপমাত্রা পরিমাপ করতে হবে এবং আবহাওয়া পূর্বাভাস অনুযায়ী প্রয়োজন পড়লে কাজ আগেই বন্ধ করতে হবে।
● যারা ঝুঁকিপূর্ণ গ্রুপের মধ্যে পড়ে, তাদের তাপপ্রবাহ চলাকালীন সম্পূর্ণ ছুটি দিতে হবে এবং সম্পূর্ণ মজুরি দিতে হবে।
● প্রতিটি কর্মক্ষেত্রে তাপমাত্রাজনিত চাপ প্রতিরোধে একটি কার্যকর পরিকল্পনা করতে হবে, যেখানে উৎপাদন প্রক্রিয়া, উপযুক্ত বিরতির সময়, পরিবেশগত অবস্থা, কাজের ধরণ ও ব্যবহারযোগ্য পোশাক/ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম বিবেচনায় নিতে হবে।
● যখন তাপমাত্রা ও আর্দ্রতা মিলিয়ে দমবন্ধ করা পরিস্থিতি সৃষ্টি করে, তখন ভারী শ্রম সীমিত করতে হবে। শ্রমিকদের কাজের জায়গার কাছে ঠান্ডা পানীয় জল সর্বদা সহজলভ্য করতে হবে। উপযুক্ত শীতাতপনিয়ন্ত্রিত বিশ্রাম কক্ষ তৈরি করতে হবে।
● সকল কর্মীর জন্য স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে, তারা যেভাবেই মজুরি পান না কেন (বেতন বা চুক্তিভিত্তিক)। নিয়োগকর্তার দায়িত্ব পালনে কঠোর তদারকি নিশ্চিত করতে হবে।
● শ্রম পরিদর্শন ও অন্যান্য তদারকি সংস্থাগুলোর জনবল ও প্রযুক্তিগত সুবিধা দেশব্যাপী শক্তিশালী করতে হবে। পরিদর্শনের দৃষ্টি হোক নিয়োগকর্তার একক দায়িত্বে পেশাগত ঝুঁকি প্রতিরোধ ও ব্যবস্থাপনার ওপর।
আমরা সকল শ্রমিকদের আহ্বান জানাই—কোনো ধরণের নিয়োগকর্তার অন্যায় বা অবিচার হলে ইউনিয়নের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
ওদের মুনাফা নয়, আমাদের জীবন মূল্যবান!